
মোঃ শামসুর রেজা তুষার,ঢাকা দক্ষিণঃ ১৯৯০ সালের বিশ্বকাপ শেষ হওয়ার কিছু দিন পরই আমার জন্ম। ছোট বেলা হতে আর্জেন্টিনা নামটা মুখে উচ্চারণ করতে খুবই কষ্ট হত। আর্জেন্টিনা যে ফুটবল টিমের নাম ও একটা দেশের নাম সেটাও এতটা গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। শুধু দেখতাম একটা নিদিষ্ট সময়ে এলাকার বড় ভাইদের এবং মামারা বাসায় ছাদের উপর পতাকা উত্তোলনের জন্য হিড়িক পরে যেত। হরেক রকমের রঙিন পতাকা। দেখে সত্যিই মনটা জুড়িয়ে যেত। আমারাও তাদের সাথে হাতে হাত লাগাতাম। আব্বুকেও দেখতাম ফুটবল খেলা দেখার জন্য অনেক রাত পর্যন্ত জেগে থাকতে। আমার মনের মাঝে শুধু একটা রঙ্গই মনে ধরেছিল আকাশী-সাদা। যেহেতু আব্বু সরকারি চাকরি করেন সেই সুবাদে বড় হয়েছি সরকারি কলোনির মধ্যে। যখন বিশ্বকাপ মৌসুম চলে আসত এলাকার বড় ভাইদের দেখতাম কেউ পেলে বা ম্যারাডোনা সেরা নিয়ে তর্ক বিতর্কে জাড়াচ্ছেন। তখন দিয়েগো ম্যারাডোনা জাতীয় দলের খেলোয়াড় নন। ক্লাব ফুটবলে উনার কিছু সরাসরি খেলা দেখার সৌভাগ্য আমার হয়েছিল তাও এখন আর সেটা মনে নেই। ছোট ছিলাম ত শুধু টিভিতেই দেখতাম আর বড়দের সাথে সেই আনন্দে যোগদান করতাম। তারপর আস্তে আস্তে তার খেলার হাইলাইটস দেখে তার প্রতি ও আর্জেন্টিনার প্রতি সত্যিই দুর্বল হয়ে গেলাম। এক বাক্যে বলা যায়, ম্যারাডোনার ভক্ত হয়েই আর্জেন্টিনার সাপোর্টার হয়ে উঠেছিলাম। তার ড্রিবলিং এবিলিটি, ভিসন, ক্লোজ বল কন্ট্রোল, গোল স্কোরিং, ফ্রি-কিক, পাসিং এবং ক্রিয়েটিভিটি ছিল অসাধারণ।
গতকাল বুধবার নিজ বাসায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন দিয়েগো ম্যারাডোনা। আর্জেন্টাইন কিংবদন্তির মৃত্যুতে শোকাহত সারাবিশ্ব। পরিশেষে শুধু এটুকুই বলব ‘কীর্তিমানের মৃত্যু নেই’। তুমি বেচে থাকবে সারাবিশ্বের কোটি কোটি ফুটবল প্রেমীদের হ্রদয়ে।