আজ ভালোবাসার দিন

৬৬

ডেস্ক রিপোর্টঃ
আজি দখিন-দুয়ার খোলা-এসো হে,এসো হে,এসো হে আমার বসন্ত এসো। এসেছে বসন্ত। আজ ১ ফাল্গুন,১৪২৭ বঙ্গাব্দ বরিবার। বিপুল ঐশ্বর্যের অধিকারী ঋতুরাজ বসন্তের প্রথম দিন। দেশজুড়ে হবে বাঙালির অন্যতম বৃহৎ অসাম্প্রদায়িক উৎসব। আজ পূর্ব দিগন্তে ওঠা সূর্য বসন্তকালকে স্বাগত জানাবে। গত বছরের মতো এ বছরও একই দিন বিশ্ব ভালোবাসা দিবস (ভ্যালেন্টাইন ডে)ও বসন্তবরণ উৎসব পালিত হবে। খ্রিস্ট্রীয় বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে অভিষেক হয়েছে ফাগুনের। সে হিসাবেই এবারো উদ্যাপিত হচ্ছে বসন্ত উৎসব। ভালোবাসা দিবসে ভালোবাসার মানুষকে জানানো হয় ফুলেল শুভেচ্ছা। ফাল্গুন প্রকৃতিতে যেমন রঙ ছড়ায় তেমনি রঙ ছড়ায় প্রাণেও। এ সময় বর্ণিল প্রকৃতির সাথে নিজেকে রাঙাতে পছন্দ করে অনেকে। আজকের দিনে তরুণ-তরুনীসহ বিভিন্ন বয়সী মানুষ তার প্রিয়জনকে ফুল দিয়ে ভালোবাসা প্রকাশ করবেন। ফুলেল পরিবেশে হবে বসন্ত বরণের নানা অনুষ্ঠান। ভালোবাসা আর বসন্ত মিলে আজ উৎসবে মাতোয়ারা থাকবে পুরো দেশ। কবিগুরুর ভাষায় বসন্ত দাও আনি ফুল জাগাবার বাণী তোমার আশায় পাতায় পাতায় চলিতেছে কানাকানি। শেষ হলো কানাকানি। প্রেমের কবি নজরুল তাই ঘোষণা করছেন,এলো খুনমাখা তূণ নিয়ে খুনেরা ফাগুন । ভাটিবাংলার প্রেমিক পুরুষ বাউল শাহ আব্দুল করিমও গাইলেন বসন্ত বাতাসে সই গো বসন্ত বাতাসে বন্ধুর বাড়ির ফুলের গন্ধ আমার বাড়ি আসে। প্রকৃতিতে রুপের মাধুরী সৃষ্টি করে,ফুলে ফুলে চারদিকে সুশোভিত করে শীতল পরশের মোহনীয়তায় আবির্ভাব ঘটে তার। ঋতুরাজের আগমনে প্রকৃতির পাশাপাশি মানবমনেও জাগে আনন্দের জোয়ার। প্রকৃতিতে প্রাণের স্পন্দন আর মানবমনে ভালোলাগার এক বিমূর্ত অনুভুতি জাগায় ঋতুরাজ বসন্ত। তাই এ ঋতু সবার কাছে পরম কাঙ্কিত। ভালোবাসি ভালোবাসি তোমায় যে ভালোবাসি শূণ্য এ জীবনে তোমার এ হাসি। আবার বসন্ত রাত্রি আমাদের দুয়ারে দিল হানা উন্মনা ছিলাম আমি তবু সে আমারে ভুলিল না। এখন শুধু রাজধানী ঢাকা নয়,দেশের প্রায় সব জেলায় এমনকি প্রত্যন্ত অঞ্চলেও এই উৎসব পালন করা হয়। বাঙালীর উদযাপনে একটি সার্বজনীন উৎসব হয়ে গেছে বসন্ত উৎসব। ভালোবাসা দিবস বা সেন্ট ভ্যালেন্টাইন’স ডে একটি বার্ষিক উৎসবের দিন যা ১৪ই ফেব্রুয়ারি ভালোবাসা দিবসটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উদযাপিত হয়ে থাকে। কেউ ভালোবেসে হাসে, কেউ বা ভালোবেসে হাসায় অন্যজনকে। ভালোবাসা দিবসে কেউ ছুটে আপনজনের সান্নিধ্যে,কেউ আবার ভালোবাসার টানে ছুটে যায় ছিন্নমূলের কাছে। কেউ ভালোবাসে,কেউ ভালোবাসায়। এই ভালোবাসাবাসির মধ্যখানে আবার কেউ এসে দেয়াল হয়ে দাঁড়ায়। পবিত্র ভালোবাসার জয় দেখতে আগ্রহী আমরা সবাই ভালোবাসায় পরিপূর্ণ হোক সবার জীবন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্তে আজ থাকছে বেশ কিছু অনুষ্ঠান। বসন্তের প্রকৃতি বর্ণনা ও বন্দনা ছাড়াও এসব অনুষ্ঠান থেকে বাঙালির জীবনে বসন্তের প্রভাব নানা ব্যঞ্জনায় ফুটিয়ে তোলা হবে। একদিন আগে থেকেই ঢাকার ফুলের দোকানে ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যেখানে ফুল বিক্রি হতো না, সেখানেও এখন ফুলের পসরা। এমনকি ঢাকার ফল ব্যবসায়ীরা ফুল বিক্রি করছেন! আজ এ বিক্রি বেড়ে কয়েকগুণ হয়ে যাবে বলে আশা করছেন বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার্স সোসাইটি (বিএফএস)। আজ ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও বসন্তকাল শুরুর প্রাক্কালে শাহবাগের পাইকারি ফুলের বাজার ব্যাপক চাঙ্গা হয়ে উঠেছে। গত বছরের মতো এ বছরও একই দিন বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও বসন্তবরণ হওয়ায় গতকাল শনিবার কাকডাকা ভোর থেকে ক্রেতা-বিক্রেতাদের উপস্থিতিতে সরব হয়ে ওঠে শাহবাগের ফুলের বাজার। গোলাপ,রজনীগন্ধা,লিলি,গাঁদা,গ্লাডিওলাস,জিপসি,রঙ্গন,জারবেরা,কাঠমালতি,অর্কিড ও শাপলাসহ অসংখ্য ফুলের পসরা সাজিয়ে বসেন ফুল ব্যবসায়ীরা। ফুল বেচাকেনার জন্য মূলত শাহবাগ শিশুপার্ক সংলগ্ন স্থান থাকলেও ভালোবাসা দিবস ও বসন্তবরণ উপলক্ষে দুদিন ধরে ফুলের চাহিদা বাড়তি থাকায় পাইকারি ব্যবসায়ীরা অন্যান্য দিনের চেয়ে অনেক বেশি ফুল বিক্রির জন্য নিয়ে আসেন। ফলে ফুল বেচাকেনার জন্য নির্ধারিত স্থানের সীমানা পেরিয়ে ফুটপাত এমনকি শিশুপার্কের সামনে থেকে শাহবাগ কন্ট্রোলরুমের সামনে পর্যন্ত রাস্তার একাংশেও ফুল সাজিয়ে বিক্রি করতে দেখা যায়। এ কারণে সাতসকালে যানজটও তৈরি হয় সড়কে। এক পাইকারি ব্যবসায়ী বলেন,অনেক দিন পর বেচাকেনা অনেক ভালো হচ্ছে। ভালোবাসা দিবস ও বসন্তবরণ উপলক্ষে রবিবার বিক্রি আরো বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

50% LikesVS
50% Dislikes
Leave A Reply

Your email address will not be published.